Monday, May 15, 2017

স্বার্থপর ভালোবাসা



--তুমি কি সত্যিই চলে যাবা(তাসিন)
--হুমম (ফারিয়া)
--না গেলে হয় না?
--নাহ হবে না। আমি আমার স্বপ্ন পূরণ করতে চাই
--তাই বলে আমার ভালোবাসাটা শেষ করে
--এগুলো ভালোবাসা কিসের। প্রয়োজন ছিলো তোমার হাত ধরার ধরেছি। এখন সব শেষ।
--তুমি না আমায় বলেছিলা আমার জন্য সব করতে পারবে
--এটা ভুল ছিলো। আর এখন আমি বিদায় নেব এটাই ঠিক। আমার আমেরিকা থেকে উচ্চশিক্ষা নিতেই হবে।
--আচ্ছা ভালো কথা। কিন্তু আমার ভালোবাসাটা অন্তত ভুলো না। আমি অপেক্ষা করতে রাজি আছি।
--লাগবে না ভালোবাসা। এমনিতেই পারব চলতে।
--সত্যিই কি পারবে?
--হুমম তো কি?
--তুমি ভুল করছো
--যা খুশি করছি। তুমি এখান থেকে যাও
..অসহ্য একটা
.
কিছুই বলার নেই আর তাসিনের। নিজেকে খুব একা লাগছে তার এমনটা যে হবে কখনও ভাবে নি। পড়াশোর জন্য ভালোবাসাটাকে কবর দিলো।
ও কি বুঝে না জীবনে কতটা প্রয়োজন ভালোবাসা। একদিন হয়তো বুঝবে কিন্তু থাকবো না আর আমি। শত আর্তনাদ ও আমায় আর ছুঁতে পারবে না।
আমি নিজেই আজ শেষ করে দিলাম সব। আমি আর ফিরব না কখনও তার ডাকে।
তাসিন তা ভাবছে আর কাঁদছে।
.
.
খুব বেশি ভালোবাসতো। তিন বছরের সম্পর্ক কখনও কোনোদিন রিয়ার কথার অবাধ্য হয় নি। তবুও তাকে ছেড়ে সে চলে যাবে তার মূল্যবান পড়াশোনার জন্য। একটা মন ভাঙ্গায় কতটা কষ্ট সে যদি বুঝতো তবে কখনও এমনটা করতো না। তাসিন সেই ছেলেটা যে প্রতিদিন তার প্রিয় আইসক্রিম তাকে দেওয়া থেকে নিয়ে ঘুমুবার আগে শুভ রাত্রি পর্যন্ত সব কিছু ও করতো।
ফারিয়ার ভালো লাগতো গান শুনতে
প্রতিটাদিন গান শুনাতো। অনেকবার তাকে এক্সিডেন্ট এর হাত থেকে বাঁচাতে গিয়ে নিজে এক্সিডেন্ট হয়েছে।
কিন্তু এরপরও সে বুঝলো না। তার পড়াশোনাটাকেই প্রধান ভাবলো।
.
এরপর তাসিন আর শহরটায় থাকে নি।
চলে যায় অন্য কোথায়। দিন যেতে যেতে বছর তিনেক এ পা রাখলো।
ফারিয়া তার কাঙ্ক্ষিত কার্যকলাপ সম্পন্ন করে দেশে ফিরলো।
বেশ কয়েকটা দিন বাসায় ই ছিলো
এরপর একটু একটু করে এদিক সেদিক
ঘুরাফেরা করতে বের হয় সে। কিন্তু পথগুলো তে যে মিশে আছে নানান স্মৃতি। সে সবচেয়ে মিস করে এখন কোনো একটা মানুষের কার্যকলাপগুলো। দিন যেতে লাগলো আর ফারিয়ার অস্থিরতা বাড়তে লাগলো। খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা শুরু করলো কোথায় সে।কিন্তু কাউকেই পাচ্ছে না তাকে বলার সে কোথায় আছে।একদিন বিকালে ঘুরতে বের হলে হঠাৎ দেখা পায় তার এক বন্ধুর সাথে যে সবকিছু জানতো তার আর তাসিনের সম্পর্কে। তাকে পেয়েই জিগ্যেস করলো,
--তাসিন কই জানো তুমি?
--কেন?
--আমার ওরে লাগবে
--কি করবা। আবার আঘাত করতে
--নাহ। আমি ওরে ফিরে চাই
--সেটা তো তাসিন ই বলেছিলো। সে হারিয়ে যাবে
--আমি ওকে খুঁজবো তুমি বলো কোথায় পাব
--ওহহ তাই।
--বলো আমায়
--পাবে না খোঁজে।
--কেন?
--তা জেনে তুমি কি করবা? তোমার ত এখন সব হয়েছে তোমার ত মানুষের অভাব হওয়ার কথা না।
--প্লিজ তুমি বলো ও কোথায়? আমি ওরেই চাই প্লিজ বলো আমায়
--দুঃখিত। তোমার স্বার্থপরতায় তাসিন নামক কোনো একটা ছেলের মৃত্যু হয়েছে এটা বুঝে নাও। শত চেষ্টা করেও পাবে না। এটা বলে দিলাম।তুমি তোমার মত বাঁচো গিয়ে
.
ফারিয়ার কান্নাগুলো ও তাসিনের বন্ধুর মনে কোনো প্রভাব ফেলতে পারলো না।
শত চেষ্টায়েও কাজ হবে না আর যেখানে স্বার্থ আগে সেখানে ভালোবাসা মৃত। আর সেটাই হয়ে গেলো তাসিন ফারিয়ার ভালোবাসায়। তার আর্তনাদগুলো আজ আর তাসিনের মনে সাঁড়া ফেলবে না।বিশ্বাস বড় অদ্ভুত ব্যাপার যা একবার নষ্ট হলে ফিরে পাওয়া খুব কঠিন আর যদি বিশ্বাসটা ভঙ্গ হয় কোনো স্বার্থপরতায় তাহলে তো
একেবারই অসম্ভব। যার ফলেই তো সব শেষ হয়ে গেলো তাদের ভালোবাসার................!!!!







সংকলিত (মুসাফির)

No comments:

Post a Comment