Monday, May 15, 2017

ভালবাসা না মা? অতঃপর



-হ্যালো, আমি সায়মা
-এই নাম্বার কার?
-আমার আম্মুর, কিছু কথা ছিল তোমার সাথে আমার।
- কি বলবে বলো।
- এই আমাকে ঈদে কি দিবে, আমার আম্মু বলছে আমাকে কিছু কিনে দিবে না, তুমি তো আমার ফ্যামিলি খবর জানো।
-তুমি কি চাও বলো।
- আমার একটা শাড়ি হলেই হবে।
-ঠিক আছে।
-সায়মায় বাই।
-বাই।
জয়ের মাথায় আরেক চিন্তা আসে পরলো।
তার কাছে কোন টাকা নাই, আর তার মা তাকে আর কোন টাকা দিবে না বলে দিছে। কারন টাকা চুরি করে এই মেয়ের লেখা পড়ার খরচের জন্য দিতো।
এখন কি করবে মাথায় কোন উপায় না পেয়ে। একটা কথা মনে পরলো।
এক বড় ভাই না বলছে তার আম্মুর রক্ত লাগবে। আমার রক্তের পজিটিভ এর সাথে মিলে।
তাই বড় ভাইকে ফোন দিলো জয়। তারপর ১০০০টাকা রক্ত বিক্রয় করলো। পরে ৮০০ টাকা দিয়ে একটা শাড়ি কিনলো ।আর শাড়ি কিনে ২০০টাকা থাকে ।
যা দিয়ে সায়মার সাথে দেখা হলে কিছু খাওয়াতে পারে।
একদিন ফোন দিয়ে সায়মাকে খবর দিল স্কুলে পাশে কোচিং আসতে।
সায়মা ১১টা নাগাদ আসলো আর দোকান থেকে কিছু খাবার কিনে আনলো।
খাওয়া শেষ হলে শাড়িটা দিল কিন্তু সায়মা জানে না যে এই শাড়ি রক্ত বিক্রি করা টাকায় কিনা।
আর জানতে চায় নাই যে টাকা কই পাইলা তুমি।
s.s.c result দিল সায়মা পাইলো 4.88।
একমাস পর
-হ্যালো জয়।
-হা সায়মা বলো
-একটা কথা বলার ছিল।
-হা বলো কি বলবা।
-আমার কাবিন হয়েছে।
- মানে?
-আগামী ১১ সেপ্টেম্বর ২০১১ আমার বিয়ে।
-জয় কি বলবে তা যেন বাকশক্তি হারিয়ে ফেলছে।
- কথা বলো না কেন জয়?
-কি বলবো, বিয়ে কার সাথে।
-রহিম ফকির।
- মানে আওয়ামীলীগের নেতা যে।
-হা।
-আমার কথা কিছু মনে করলানা।
-এই কথা বললে আমার আব্বু গলায় দড়ি দিবে বলছে।
-বলো এখন কি করতাম।
-ঠিক আছে। সুখে থাকো।বলে ফোন রেখে দিল।
যে ছেলে কখন সিগারেট খাই নি সে ছেলে এখন কি না গাজা মদ আর সিগারেট খায় প্রতিদিন।
আসতে আসতে বিয়ে দিন ঘনিয়ে আসছে আর জয় একটা ভাল ছেলে থেকে হচ্ছে খারাপ নেশাখোর ছেলে।
জয় এক বন্ধু ফোন দিল যে তুই একটা বাজারে আসবি কথা আছে। পরে বাজারে গেল জয়। বন্ধু সায়মার না কি টাকা চাই টাকা।
কাউকে এত ভালবাসতে নাই রে বন্ধু।
এমন সময় পকেট থেকে সিগারেট বের করে ধরালো তা দেখে তো ওর বন্ধু সাজ্জাদ অবাক।
যে ছেলে না কি বই আর সায়মাকে ছাড়া কিছু বুঝত না।
সে না কি সিগারেট খায়।
পরে সাজ্জাদকে বললো, জয় বিয়ের দিন সাইমার বাড়ি আসবি আমি আসবো।দেখবো কেমনে কবুল বলে। পরে ১১ সেপ্টেম্বর আসলো। জয়কে দেখে তো সায়মা অবাক। পরে জয়ের সামানে ৯টা২৩ মিনিট ৫৬ সেকেন্ড কবুল হলো।
সায়মা হাজব্যান্ডকে নিয়ে খুব সুখে আছে।
অন্যদিকে জয় সেই ১১ সেপ্টেম্বর বাড়ি ছাড়ছে আজ প্রায় চার বছর হতে চলছে তাও বাড়ি যায় নি।
এখন সায়মার প্রতি জন্মদিন একা একা কেক কাটে।
আর সায়মায় হইতো শশুরবাড়ির সবাইকে নিয়ে জন্মদিন পালন করে।
আর শেষ সেই কোচিং এ দেখা করার কথা মনে পরে প্রতি রাতে নেশা,
আর কান্না করে আমি ভাল নেই,আমি তো তোমার দেহকে ভালবাসি নাই তোমাকে ভালবাসে ছিলাম।
আমার জীবনটা কেন নস্ট করলা।
আমাকে কেন তুমি বাড়ি ছাড়া করলা সায়মা।
অসমাপ্ত এই গল্পটা ১০০% সত্যি।
আমার ডাইরির মাঝে লিখাছি।
আমি একটা সময় খুব ভাল ছিলাম। আমি আমার মা বাবা আমার পরিবারের খুব আদরের ছিলাম।
আমি আমার মাকে খুব বেশি পছন্দ করতাম না কিন্তু মা আমাকে অনেক আদর করতো
আমি আজ চার বছর ধরে আম্মুকে দেখি না
আর কখন চাইলেও পারবো না দেখতে ১৭ রোজার দিন মারা গেছে stock kore তাও আমার জন্য
আমি সেই দিন বিষ আর ঘুমের বড়ি খেয়েছিলাম।
এই খবর আমার আম্মু কিভাবে জানি শুনতে পাইছে।
পরে আমি তো ৬৪ ঘন্টা অজ্ঞান ছিলাম আর পরে মামা বলছে আম্মু না কি stock করছিলো আর জ্ঞান ফিরে নাই আমার মাত্র জ্ঞান ফিরছে ১০ মিনিট ও হই নি আমি এই অব্যস্থায় বাড়ি যাই। আম্মুকে দেখতে কিন্তু কপাল খারাপ আমাকে কাকারা দেখতে দেয় নি জীবনের শেষ দেখাও দেখতে পারি নাই আর মাটিও দিতে পারি নি।
এই অসুস্থ শরীর নিয়ে রাত আমার আম্মুর কবরের পাশে বসে ছিলাম একবার দেখার জন্য।
আমার বন্ধুরা আমার পাশে বসা ছিল

আমার হাত কাঁপতেছে বাকি কিছু আর লিখতে পারতেছিনা।
সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।
ছিল আমার যে কত সপ্ন
নষ্ট রক্তে হয়ে গেছে আজ কালো
 
সংকলিত (কষ্টের ফেরিওয়ালা)

2 comments: